এবার সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একদিকে যেমন ধান কাটার শ্রমিকের মজুরি বেশি, অন্যদিকে রয়েছে কিছুটা শ্রমিক সংকট। এরই মধ্যে জমিতে পেকেছে ধান। সেই পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন আসান প্রামাণিক নামের ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ কৃষক। অসহায় এই কৃষকের বিষয়টি শোনার পর স্বেচ্ছায় তার জমির ধান কেটে দিয়েছেন স্থানীয় আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা।
গতকাল সকালে উপজেলার রসুলপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ফসলী মাঠে সহকারী ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার সবুজ মিয়ার নেতৃত্বে ১২-১৫ জন আনসার ভিডিপির সদস্য কৃষক আসান প্রামাণিকের ধান কেটে দেন। কৃষক আসান প্রামাণিক উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের সহকারী ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার সবুজ মিয়া বলেন, বর্তমানে একজন শ্রমিকের মূল্য ৫০০ টাকা ও একবেলা খাওয়া। এরপরও ধান কাটার জন্য ঠিকমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। আসান প্রামাণিক একজন অসহায় কৃষক, সে অন্যের জমি নিয়ে চাষাবাদ করেন। শ্রমিকের যে মজুরি তাতে আসান প্রামাণিকের জন্য কষ্টকর। এজন্য আমি আনসার ভিডিপির সদস্যদের নিয়ে তার পাকা ধান কেটে দিয়েছি।
কৃষক আসান প্রামাণিক বলেন, ৬০ শতাংশ জমির ধান পেকে গেছে। আমি কামলা (দিনমজুর) পাইনি। আনসার কমান্ডার সবুজ মিয়াকে বলার পর তারা আমার ধান বিনা মূল্যে কেটে দিয়েছে। আমি তাদের এই কাজে অত্যন্ত খুশি। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কামারখন্দ উপজেলা প্রশিক্ষক মো. নবিরুল ইসলাম বলেন, এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। তাদের কাজে আমরা গর্বিত।
এদিকে কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন চন্দ্র বর্মণ বলেন, উপজেলাতে ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। তিনটি হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিক সংকট নেই বলেও দাবি তার। আনসার সদস্যরা স্বেচ্ছায় কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার বিষয়টি প্রশংসনীয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট চন্দন দেবনাথ বলেন, বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকেই জানলাম। আনসার ভিডিপি সর্বদাই দেশের ও দেশের প্রান্তিক জনগণের জন্য কাজ করে। তারা এমন একটি কাজ করে থাকলে আমি তাদের জন্য গর্বিত।